ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫ , ২৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ফসলের উৎপাদন খরচ খুঁজতে ভ্রমণ ব্যয়ই ১০ কোটি টাকা বিভিন্ন ইস্যুতে সংঘটিত হচ্ছে লুটপাট-সহিংসতা প্রশ্নফাঁসের গুজব ঠেকাতে মনিটরিং টিম ট্রাম্পের চড়া শুল্ক কার্যকরে দিশেহারা বিশ্ব বাংলাদেশকে দেয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত বিএসএফ’র বিরুদ্ধে বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ মাইনরিটি দলকে নিবন্ধন দিল ইসি রাজবাড়ীর চরে আগুনে ছাই ঘরবাড়িসহ ১২ গরু চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ৩ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১৩ ঘর হারাম টাকা দিয়ে ইবাদত হয় না-ধর্ম উপদেষ্টা ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম বাবা-মেয়ে কারাগারে চাঁদপুরে পুকুরে ডুবে মা-ছেলেসহ ৩ জনের মৃত্যু এস আলমের ৯০ বিঘা জমি জব্দ স্থবির এলজিইডি ঢাকা জেলা গাজার প্রতি সংহতি জানিয়ে বৃহস্পতিবার র‌্যালি করবে বিএনপি আমদানি বৃদ্ধিতে বেড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব কাস্টমস্ কর্মকর্তার অঢেল সম্পদ! অর্থ পাচারকারীদের জীবন কঠিন হবে-গভর্নর পোশাকশ্রমিক-আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংঘর্ষ, আহত ৫০ অপরাজেয় বায়ার্নকে রুখে দিলো ইন্টার মিলান

অনিশ্চিত চার লেন প্রকল্পে চীনা অর্থায়ন

  • আপলোড সময় : ৩০-০৯-২০২৪ ১১:৫২:৫৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ৩০-০৯-২০২৪ ১১:৫২:৫৯ অপরাহ্ন
অনিশ্চিত চার লেন প্রকল্পে চীনা অর্থায়ন
* ডলারের দাম বাড়ায় চুক্তির সংশোধন চায় চীনা কোম্পানি * কিস্তির ভিত্তি না বাড়ালে লোকসানের আশঙ্কায় এসপিভি * এডিবির প্রতিবেদন পেলে আলোচনা  দুই পক্ষের

অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ঢাকার রামপুরা থেকে ডেমরার শিমরাইল পর্যন্ত চার লেন এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে চীনের অর্থায়ন। চুক্তি সংশোধন করে কিস্তির ভিত্তি না বাড়ালে অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছে চীনা কোম্পানি। তারা জানান, তাদের লোকসান হবে যদি বিদ্যমান চুক্তিতে অর্থায়ন করা হয়।
সম্প্রতি এই প্রকল্পে লেনদেনবিষয়ক উপদেষ্টা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংককে (এডিবি) সার্বিক অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছে সরকার। প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর দুই পক্ষ আলোচনায় বসবে।
দেশে এ পর্যন্ত নেয়া সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প রামপুরা-আমুলিয়া-ডেমরা চার লেন এক্সপ্রেসওয়ে। যার দৈর্ঘ্য ১৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) এই প্রকল্পে প্রতি কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৪৪ কোটি টাকা। জানা যায়, রামপুরা-ডেমরা এক্সপ্রেসওয়ের জন্য সহায়ক প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি। এই প্রকল্পে সরকার ১ হাজার ২০৯ কোটি টাকা দিচ্ছে। তবে পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ হচ্ছে না। ফলে ২০২২ সালে নেয়া মূল প্রকল্পের (এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ) কাজ শুরু হয়নি। ২০২৬ সালে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। পিপিপি কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের লেনদেনবিষয়ক উপদেষ্টা নিয়োগ করে এডিবিকে। ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই কনসোর্টিয়াম অব চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি), চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়। চীনা এই দুই প্রতিষ্ঠান মিলে রামপুরা-আমুলিয়া-ডেমরা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি স্পেশাল পারপাস ভেহিক্যাল (এসপিভি) কোম্পানি গঠন করে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, সিসিসিসি ও সিআরবিসির সঙ্গে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি চুক্তি করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণে খরচ ২ হাজার ৯৪ কোটি টাকা এবং ৩৫ দশমিক ৮৪২ একর ভূমি অধিগ্রহণে খরচ ১ হাজার ২১০ কোটি টাকা। অবকাঠামো নির্মাণের ২ হাজার ৯৪ কোটি টাকাই ঋণ হিসেবে দেবে চীন। ভূমি অধিগ্রহণের খরচ দিচ্ছে সরকার।
চুক্তি অনুযায়ী, চার বছরে নির্মাণকাজ শেষ করে পরবর্তী ২১ বছর রামপুরা-ডেমরা এক্সপ্রেসওয়ের ব্যবস্থাপনায় থাকবে এসপিভি কোম্পানি। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার ছয় মাস পর থেকে তারা টোল নেবে। ৪২ কিস্তিতে তারা টাকা নেবে। প্রতি ছয় মাসে একটি কিস্তি নেবে। প্রতি কিস্তির ভিত্তি হবে ১০৭ কোটি টাকা।
প্রকল্প সূত্র বলেছে, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় চীনা কোম্পানি কিস্তির ভিত্তি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে। তারা বলছে, ২০১৯ সালের জুলাইয়ে দরপত্র দেয়ার সময় এক ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা। সেই হার অনুযায়ী চুক্তিতে প্রতি কিস্তির ভিত্তি ধরা হয়েছিল। কিন্তু এখন ডলারের দাম ও মূল্যস্ফীতি-দুটিই বেড়েছে। তাই চুক্তি অনুযায়ী অর্থ নিলে তারা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ লোকসানে পড়বে।
সূত্র জানায়, এসপিভি কোম্পানির এই দাবির পর সার্বিক বিষয়ে এডিবির কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। এডিবি বলেছে, ওই প্রতিবেদন দিতে দেড় মাস লাগবে। প্রতিবেদন পেলে দুপক্ষ কিস্তির ভিত্তি নিয়ে আলোচনায় বসবে। সেখানেই চীনা অর্থায়ন নিশ্চিত করতে সমঝোতার বিষয়ে আশাবাদী প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডলারের দাম বাড়ার কারণে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জমি বুঝিয়ে না দিলে প্রকল্পে ঋণের সময় না বাড়ানোর কথা জানিয়েছিল এসপিভি। কোম্পানিটি আমুলিয়া অংশে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড তৈরি করে কাজ করছে। কিস্তির ভিত্তি না বাড়ালে ওই কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীরা সরে যেতে পারে। এতে নতুন বিনিয়োগকারী খুঁজতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হলে খরচও বেড়ে দ্বিগুণ হতে পারে।
প্রকল্প পরিচালক মো. এনামুল হক চুক্তি সংশোধন করে কিস্তির ভিত্তি বাড়ানো হলে সরকার আর্থিক ক্ষতিতে পড়বে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, চীনা কোম্পানি অর্থায়ন থেকে সরে গেলে সরকার আরও ক্ষতির মুখে পড়বে। তবে সহায়ক প্রকল্পে বিনিয়োগ করায় পরে টোল আদায় থেকে সরকারের প্রায় ৪৩ শতাংশ লাভ হবে
তিনি আরও বলেন, এসপিভি কোম্পানি বলছে, কাজ শুরু না হওয়ায় তাদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। ডলারের দাম বাড়ায় তারা চুক্তিপত্রের পরিবর্তন চাইছে। এ বিষয়ে এডিবি প্রতিবেদন দিলে আলোচনা করা হবে। তিনি বলেন, প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ চলছে। তবে এ মুহূর্তে অর্থায়ন নিয়ে একটু অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এসব কেটে গেলে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে কাজ শুরু করা যাবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স